হাবিজাবি
সুমনের প্রায় শ খানেক অনুষ্ঠানে গেছি। যে কোন অনুষ্ঠানে আমরা তখন সবাই সুমন। কত বন্ধু, কত ভাব, জীবনে কত প্রেম! আহা!
তো, একবার চেপে ধরে আমার পঙ্কজ মল্লিক, কাননবালা, আঙ্গুরবালা, সন্তোষ সেনগুপ্ত, উমা বসুতে ভেজা রবিসাধক বাবাকে নিয়ে গেলাম। আহা! শুনেই দেখনা একবার। কলামন্দির। আমি, বাবা আর বাবার পাশে আমার দোস্ত, আমার বলাই। প্রথম সারিতে গুছিয়ে বসে, শুরুতে বাবাকে খুব বুঝিয়ে যাচ্ছি। বেশ কয়েকটা গানের পর, আমি আর দোস্ত যখন পুরো মোহিত, হঠাৎ শুনি নাসিকাগর্জন!
- বাআবা ! কি করছ?
- ক্কে? ক্কেন? কি হয়েছে?
- ফার্স্ট বেঞ্চে বসে নাক ডাকছ? তাও আবার সুমনের গানে? আমি কি আর মুখ দেখাতে পারব, এরপর! ওঠো, ওঠো!
হা হা করে উঠে বসলেন।
কিছুক্ষণ পর আবার! বলাই বলে, দোস্তো, ছাইরা দে কাকারে!
এদিকে সুমন শুরু করেছেন, "আজ আমি ফিরে এসেছি, তোমার পাশে বসেছি ... "
এদিকে সুমন শুরু করেছেন, "আজ আমি ফিরে এসেছি, তোমার পাশে বসেছি ... "
বাবা হঠাৎ প্রায় চিৎকার করে, আরে আরে, এটা তো ওই ছোড়া দুটোর গান না!
আর নিয়ে যাইনি নতুন যুগের গাইয়েদের সাথে মেলাতে।
====
পলায়ন স্বাস্থ্যকর অনুশীলন। তপ্তপাত্রে হাত দিতে না পারাটাই দস্তুর সর্বক্ষেত্রে, সেইখানে দস্তানা-ন্যাকড়া জানালা, দরজার পাল্লার কার্য সাধন করে। আমাদের বড় হয়ে ওঠা কালের একমাত্রিক সংবাদ-দারিদ্র্যতার প্রভাব এই অন্তাধুনিক উত্তর-সত্য পর্বে পীড়াদায়ক জমকালো বহুরূপী রূপে নিঃশব্দে কোল পেতেছে নঙ-সত্যের ঘনঘটাকে মননে, বোধে নিতে বলে যাচ্ছে, বাহ্যিক রঙ্গলীলায় আমাদের মজিয়ে অন্তরে বজ্রকীট রূপে প্রবেশ ঘটানোর অভিপ্রায়ে। পলাইবার পথ নাই, ও, তোর সুন্দরতম যম আছে পিছে, এ সব মনস্তাত্ত্বিক দিগগজের বক্তব্য। তাদের মূল বক্তব্যে ত্রুটি যেটুকু তা বলা চলে 'হুড়মুড়িয়ে' বনাম ধীরলয়ে প্রবেশের আসুরিক ক্ষতিকে উহ্য রাখা। আমাদের প্রজন্মের ললিত-লবঙ্গ-লতিকা শিক্ষাপ্রনালীতে প্রথম 'বেলাজ' পদক্ষেপ দূরদর্শন ২'র অনুকম্পায়, তা আজ 'হুড়মুড়িয়ে' টেসলা-ভবিষ্যবাণীর প্রতিটি শব্দ মেনে দূরারোগ্য মনস্তাপে পর্যাপ্ত।
হট্টমালার দেশে কে কতটা নিতে পারবির বদলে নিয়ে নে'র পেশিবহুল উন্মাদনার ফলভোগ করতেই হয়। একমাত্রিক-সংবাদ পিটুলিতে অপুস্টিজনিত বেড়ে ওঠার এই সৎ-সরল শিশুমন ছুমন্তরে মহাপুরুষ হয়ে উঠতে চাইতেই পারে! আশ্চর্যের কিছু নেই।
মশা, মাছি থেকে দূরে রাখুন নিজেদের, বাচ্চাদের; জানালা, দরজা বন্ধ করে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে যান। খাবার ঢাকা দিয়ে রাখুন।
আমরা মশা-মাছির সাথে কুস্তি করতে পারিনা, চেষ্টায় কোন বাহবাও দিই না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে, দেশে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রাণী। সেগুলোকে আমরা নানাভাবে ত্যাগ দিই। যেচে নিজের শরীরে প্রতিষেধক নিই না। শট নিলেই শরীর খারাপ, পড়লাম। তবু আর্থ-জাগতিক-মুনাফা-গতির অপ্রতিরোধ্য স্বার্থে নিই, নিয়ে থাকি। সে অন্য প্রসঙ্গ।
=====
নির্ঘুমের নিরসনে বলি, ইদানিং আন্তর্জাল এবং বাকি সাবেকি মাধ্যম হেতু আমাদের অজান্তেই এমন কিছু আপাত নিস্পাপ তথ্য (খারাপ, ভয়াল, কুৎসিতাদি নবরসের অন্য অজানা উল্লাসগুলি) এসে যাচ্ছে এবং তা এমন রৈখিক রূপে প্রকট হচ্ছে যা আমাদের কোমল (অনন্যসাধারণ 'নঙ-জটিল' দশকে আমাদের বেড়ে ওঠার দরুন) হৃদয়ে শেলের মত বিদ্ধ হচ্ছে - অবিরত। নবরসের এই ভয়াল রূপগুলি এতকাল আমাদের অজানা ছিল। এগুলো থেকে বাঁচবার অন্যতম উপায় শান্ত থাকা। অবিচলিত থাকা। আর বেশ কিছু ক্ষেত্র বিশেষে দরজা, জানালা বন্ধ করে রাখা।
দেখব না, শুনব না, বলব না, বুঝব না। কারন অতি সাধারণ, এইগুলো আমাদের ছোটবেলার ভুতের গল্প বা এক্সর্সিস্ট দেখা বা পড়া নয়; এগুলোর জন্য আমরা তৈরী হইনি। পরবর্তী প্রজন্ম হয়ত তৈরি হচ্ছে।
দেখব না, শুনব না, বলব না, বুঝব না। কারন অতি সাধারণ, এইগুলো আমাদের ছোটবেলার ভুতের গল্প বা এক্সর্সিস্ট দেখা বা পড়া নয়; এগুলোর জন্য আমরা তৈরী হইনি। পরবর্তী প্রজন্ম হয়ত তৈরি হচ্ছে।
হ্যাঁ। জানি, বলবে, ওসব কি তুমি পার! আমাকে বলছ যে! কেন বলছি জান? আমি এই নেশায় পড়িনি। আমায় কখনো এই মাধ্যমগুলি টানে নি। আমি পলাতক। পালিয়ে পালিয়ে যাই। এই বাংলা আড্ডাতেও খুব বেশি হলে বছর খানেকের বাসিন্দা। তারপরেই ফুরুৎ।
সে যাক। ঘরে, বাইরে দেখি যে এই নব্যসামাজিকমাধ্যম বাসীরা কেমন ভাবে 'অতিশব্দ' জালে জড়িয়ে পড়ল। খুব কমই শান্ত থাকলো, বাকিরা থাকলো না। প্রতিদিন তাদের একটা যুদ্ধ চাই। সেই যুদ্ধের শিকার বাকি সরল প্রান। তাদেরও শিকার করতে হবেই। নয়ত কিসের বাঁচা। এক দল ডন কিহ্যোতীয় রোষে দিনযাপন না হলেই যে হেরে যাওয়া। সুকুমারী ছায়ার সাথে যুদ্ধ করে গাত্রে হল ব্যাথা। যুদ্ধু করবে না রাজামশাই! যুদ্ধু! আরে শত্রুই যদি না থাকলো, আর তাকে হারাতেই না পারলাম যদি ... সেই নো এক্সিট।
এই বীভৎস হট্টগোল আমাদের জ্বালাচ্ছে। প্রতিনিয়ত। কানাডা থেকে কইখালি। এই উচ্চনাদ আর হট্টগোলের প্রভাব আমরা বুঝি না, ভেসেই চলেছি, এবং বুঝতেই চাই না। নির্জনতা, নিস্তব্ধতা, নির্বিকল্পের প্রয়োজন। ঠাকুরের পাঁকাল মাছ হয়ে থাকা। কাল বলছিলে না নিরপেক্ষতার কথা! আমি অজ্ঞানী হয়ে থাকার সুফল বলছি।
রাজার অসুখ গল্প বলছি। আমার মোবাইল ভর্তি হাঁদা-ভোদাদি ভরা। যা বললাম খুবই সাধারণ কথা। সবাই বলে। ঘুমানোর আগে নিয়ম করে টেনিদা বা ভোম্বল সর্দার বা বাবুইবাসা বোর্ডিং পড়। একপাতা করে এগোবে। রোজ একটু একটু করে দামী চকোলেটের মত।
রাজার অসুখ গল্প বলছি। আমার মোবাইল ভর্তি হাঁদা-ভোদাদি ভরা। যা বললাম খুবই সাধারণ কথা। সবাই বলে। ঘুমানোর আগে নিয়ম করে টেনিদা বা ভোম্বল সর্দার বা বাবুইবাসা বোর্ডিং পড়। একপাতা করে এগোবে। রোজ একটু একটু করে দামী চকোলেটের মত।
redi in interiorem hominem.
"... মম শূণ্যগগনবিহারী।
আমি আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তোমারে করেছি রচনা..."
নিরপেক্ষতা রাজনৈতিক। প্রগলভ। দাবীদার । ক্ষমতা আর আনুগত্য চাইতেই থাকে। ডাঙা থেকেই খালি খালি হাঁক পারে কুমীর তোর জল্ কে নেমেছে।
তবে এই প্রসঙ্গে বলি শোন, নির্জনতা, নিস্পৃহতা আর উদাসীনতা কিন্তু এক একটি সাধনা। মুক্তি আর একটি। Parrhesia এদের হাত ধরে টেনে নিয়ে আসে। ওদের নীটশে। ত্যুরিনে একটা ঘোড়ার মালিক তার ঘোড়াকে মারছে চাবুক আর সেই চাবুক একটা একটা করে ওঁর পিঠে পড়ছে। সেই শোকে জববন্ধ - পাগল - মৃত্যু। ঘোড়া আর মালিকের কি হল? Bela Tarr, The Turin Horse দেখো। সার্ত্র্ ছিল। নোবেল নেব না, কি করবি কর! আর সেদিন অব্দি ছিল উমবের্তো একো।
আমাদের ভাষায় নির্জনতার রেশ সঞ্জীব চন্দ্রে, পালামৌতে, নিস্পৃহতা হুতোমে। বিভূতিভূষণ। জীবনানন্দ। তুষার রায়- 'নিভে গেলে ছাই ঘেঁটে দেখে নেবেন পাপ ছিল কিনা।' আর কি চাই! বেশ আছে। অল্পই প্রকাশিত, বাকিরা অপ্রকাশিত থাকে। অসামাজিক, মিথ্যুক, রগচটা ইত্যাদির আবরণ, আভরনে নিজেদের ঢেকে রাখে। কেন থাকবে না বলতে পারো!
আর সবার উপরে আছে মুক্তি। বিনয় বসু। তোরা আমায় মারবি? এত দেমাক! দ্যাখ, দ্যাখ, ভেল্কিবাজী । আঙুলের ভেল্কি দেখাই তোদের ...
এমন মানব জনম আরকি হবে!
মন যা কর ত্বরায় কর, এই ভবে।
মা! মাগো, ভবতারিণী
====
====
অ) কিন্তু নির্জনতাকে ব্র্যাকেটের মধ্যে কিভাবে রেখে দেওয়া যায়?
এ প্রশ্নটি দুটি উত্তরের আশায় বসে পড়লো যে! অর্থাৎ প্রশ্নটি দ্ব্যর্থক।প্রশ্ন তুলেছে
অ।অ। 'কিভাবে রেখে দেওয়া যায়'?
আপনারা 'রাখা যায়' মেনে নিলেন, শুধু পদ্ধতি টা জানতে ইচ্ছুক। প্রথম প্রশ্নের উত্তর যেই 'ভাবে' বাকি দুটিকে রেখে দেওয়া হল।
অ।আ। দ্বিতীয়ত 'কেন রাখা হল'!
এইখানেই গোল। অ।অ তে উত্তর দেওয়া হল।
তবুও খাতিরে বলা যেতেই পারে অন্য কিছুকে না রেখে এটিকে রেখে দেওয়াই শ্রেয়/শুদ্ধ/ সরল মনে হল, সেইহেতু।
নিস্পৃহতা, উদাসীনতা, এবং নির্জনতা তিনটিই এক পরম গন্তব্যের সাধনা। যদিও বালখিল্যতা, বলা যেতে পারে ক্রমানুসারে নিস্পৃহতা > উদাসীনতা > নির্জনতা আসে।
লক্ষ্য করবেন এগুলির শুরু করেছিলাম সঞ্জীবচন্দ্রের পালামৌ, পরে বিভূতিভূষণ (আরণ্যক - উহ্য) আর জীবনানন্দ ( সফলতা-নিস্ফলতা বা মহাপৃথিবী -উহ্য) এই নামগুলি ছুঁয়েছিলাম। যা বলিনি তা আদিমতাবাদের কথা। সেইখানে এই তিনটি চরিত্র আলতামিরা বা ভীমবেটকায় ফিরে যাওয়ার বা পৌছনোয় সাধনরত। আগন্তুকে সেনগুপ্তর 'ফাজলামি'র উত্তরে এর ছোঁয়া লেগে আছে কিছু।
লক্ষ্য করবেন এগুলির শুরু করেছিলাম সঞ্জীবচন্দ্রের পালামৌ, পরে বিভূতিভূষণ (আরণ্যক - উহ্য) আর জীবনানন্দ ( সফলতা-নিস্ফলতা বা মহাপৃথিবী -উহ্য) এই নামগুলি ছুঁয়েছিলাম। যা বলিনি তা আদিমতাবাদের কথা। সেইখানে এই তিনটি চরিত্র আলতামিরা বা ভীমবেটকায় ফিরে যাওয়ার বা পৌছনোয় সাধনরত। আগন্তুকে সেনগুপ্তর 'ফাজলামি'র উত্তরে এর ছোঁয়া লেগে আছে কিছু।
আ। "লেখার সময়ে আপনার ঐ সন্ধ্যাভাষা ব্যবহার করা থেকে যদি বিরত থাকেন‚ তবে এই অধমের খুব উপকার হয়| শুধিয়ে দেখুন‚ এখানে সবাই জানে যে আমি এট্টু মুখ্যু মানুষ|"
....
ই) এই ব্যাপারটাও খুব একটা খোলসা হল না| পাহাড় নির্জন‚ জঙ্গল নির্জন‚ রাত্রি নির্জন‚ নির্জন আমার মন| আপনি মনে মনে নির্জন হয়ে থাকবেন কি না‚ সে তো আপনার ইচ্ছে ... যদি আপনি চান| অনেকের ভিড়েও যেমন একা হয়ে থাকা যায় দিব্যি‚ ঠিক তেমনি|
এইসময়ে আপনি আমার বক্তব্যের সাথে একাকার করে নিলেন। আমি তাইই বলেছি। সবই সাধনা। কেউ রাস্তার মাঝে নির্জন তো কেউ রাতজাগা উল্লাসের মাঝেও নির্জন। সেটিই সাধনা।
আমার কথাটি ফুরালো।
====
====
আটের দশকের ছোটবেলা। পড়ছি, সব সাবেকী চালচিত্তিরের পূজারা তখন জমিয়ে থীমের মহরা দিতে শুরু করেছে। ইস্কুলের পাশে একডালিয়ার জগৎজননীই ছিল মা-বাবার আঁক কাটা গন্ডির বাইরের পূজা। প্রথামত পঞ্চমীর দিনই ছুটি পড়ত। একমাত্র সেদিন গড়িয়াহাট থেকে বাস ধরা ছিল উপহার। মালতীপিসি ওইটুই প্রশ্রয় দিতেন। সারাবছর আমরা 5ছয় জন সহপাঠী ভিখিরীর মত অপেক্ষা করতাম পঞ্চমীর বিকেলের জন্য। পরে বড়বাড়িতে আসার পর, আমার মন মানত না। অন্যান্যরা ইস্কুলের উল্টোদিকের পূজাবাড়িতে উঁকি মারতেই ভালবাসত। আমার মন সায় দিত না। কাউকে পাইনি সাথে যাওয়ার।
পূজার আনন্দ দুপুরবেলাগুলো যুগান্তর, স্টেটস্ম্যানে কত ভঙ্গীতে দশভূজা মায়ের শাদাকালো ছবি দেখে দেখে আঁকা। পাড়ার মন্ডপ আমার তখনও ছিন্নমূল সুন্দর।
লাল শালু, হলুদ আলো, লাল পেড়ে মার্কিন থান, এবং অভাবী চালচিত্তির কেনার পয়সা জোটাতে পারেনি কেউ। উদ্বাস্তু বারোয়ারী পূজায় এর থেকে বেশি হয় না। ঘুরে ফিরেই ছুটে আসতাম মায়ের কাছে। আর বলতাম একদিন একডালিয়ার মায়ের মত মা হয়ে আসবে তো আমার পাড়ায়!
লাল শালু, হলুদ আলো, লাল পেড়ে মার্কিন থান, এবং অভাবী চালচিত্তির কেনার পয়সা জোটাতে পারেনি কেউ। উদ্বাস্তু বারোয়ারী পূজায় এর থেকে বেশি হয় না। ঘুরে ফিরেই ছুটে আসতাম মায়ের কাছে। আর বলতাম একদিন একডালিয়ার মায়ের মত মা হয়ে আসবে তো আমার পাড়ায়!
তখনও চোঙা আর রেকর্ড প্লেয়ারে মন মাতাল, আমি ঝড়ের কাছে রেখে এলাম, একদিন পাখি উড়ে যাবে, সেদিনও আকাশে, আয় খুকু আয় থেকে রানার শুনতে পেতাম। এরপরে কোন এক বার রাম্বা হো হো উদ্বাস্তুর নন্দনবাসাগুলো ভেঙে দিল।
কোনদিন গন্ডির বাইরে যাওয়া হয়নি। মহা অষ্টমী। সেই একদিন বের হতাম। মা-বাবা-দিদি। বাবার ছুটির দিন সেদিন; পুর্ব কলকাতায় তখন পূজা বলতে এক, দুই, তিন, চার।
প্রথমবার কলকাতার পূজা দেখি মহম্মদ আলী পার্কের পূজা দেখি '৯০তে। সেকি উত্তেজনা! এত ভীড় হয়! এত মানুষ! ইস্কুলফেরতা বাসে আসার সময় পার্কসার্কাস, লেডিসপার্ক, আর রামলীলা ময়দানে মন্ডপ তৈরি হওয়া দেখতাম। রঙ বলতে শাদা-লাল, শাদা-নীল, শাদা-সবুজ। এই তো আমার পূজার উচ্ছাস।
এই স্টপগুলো আমায় মাতাল করে। সেখানে কলেজ স্কোয়ার আর মহম্মদ-আলিতে এসে ত্রিকাল দর্শন আমার। দলের বাকিরা সবাই তালেবর। এক একজন ফিবছর খান পঞ্চাশেক প্রতিমা দেখে। দেখবেই তো! আমি তো গন্ডিবাদী। পদে পদে পঞ্চেন্দ্রিয়, রসদ। কী আলো! কী শব্দ! কী জ্ঞানী! ব্রহ্মদর্শন হচ্ছে। একে একে অজ্ঞানতার পর্দা সরছে আমার। সবাই আমাকে দর্শন করাচ্ছে। আমিই ওদের দায়িত্ব । ওদের নিবিড়তম ছাত্র। পরতে পরতে অপার সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা । চন্দননগরের কোন পাড়া থেকে আলো এল এবার ... প্রতিমার মুখে জয়াপ্রদার হাল্কা আলাপ ... এবারের ভীড় তো কিছুই না ... !
এই স্টপগুলো আমায় মাতাল করে। সেখানে কলেজ স্কোয়ার আর মহম্মদ-আলিতে এসে ত্রিকাল দর্শন আমার। দলের বাকিরা সবাই তালেবর। এক একজন ফিবছর খান পঞ্চাশেক প্রতিমা দেখে। দেখবেই তো! আমি তো গন্ডিবাদী। পদে পদে পঞ্চেন্দ্রিয়, রসদ। কী আলো! কী শব্দ! কী জ্ঞানী! ব্রহ্মদর্শন হচ্ছে। একে একে অজ্ঞানতার পর্দা সরছে আমার। সবাই আমাকে দর্শন করাচ্ছে। আমিই ওদের দায়িত্ব । ওদের নিবিড়তম ছাত্র। পরতে পরতে অপার সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা । চন্দননগরের কোন পাড়া থেকে আলো এল এবার ... প্রতিমার মুখে জয়াপ্রদার হাল্কা আলাপ ... এবারের ভীড় তো কিছুই না ... !
রাত বাড়ে। গন্ডীর ডাক আসে শিরশিরিয়ে পিঠের মাঝখান বরাবর। বলি! মাস্টার, বাড়ি গেলে হয় না! আরে! দোস্তো! সোবে তো মহম্মদালি। এবার আরো পশ্চিমে যাব। দেখবে চল কত শত আলো, ধ্বনি, শব্দ, যন্ত্র, যন্ত্রী! আমি বাড়ি যাব! আমার বাড়ি পেয়েছে!
বাড়ি ফিরেছিলাম রাত বারোটায়। আমার জগদ্ধাত্রী ঠায় বসেছিলে। বললে, কাল সকালে বাবার কথায় কোন উত্তর দিবি না। যা বলার আমি বলব। সকালে বাবা কথায় বুঝলাম আমি গন্ডী পাড় হয়েছি।
আজও লাল-পেড়ে মার্কিন থান পরা, কোঁকড়াচুলো,খই, শিউলিফুলের মালা গলায় একটা একদম নিজের মাকে খুঁজে বেড়াই ... স্মৃতিমণ্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা ...
Comments
Post a Comment