রবি ঠাউর
... ফরসা হয়ে বেলা অনেক বয়েচে, গঙ্গাজল গড়িয়ে নেবুতলা অবদি এসে গ্যাচে, টিম টিম দোকান খুলে বাবুদের কুকুরের হাগাপনা মুকের দিকে তাকিয়ে, ১টা ২টা বিস্কুট বিক্কিরি হয়! ভাবের সাগরে নামি (২) আশি বচ্চরের শাকালিমাসির পিচনে রগুড়ে তারকাটা লাগবে কি লাগবেনা মনে কচ্চে আর মোবাইলে ব্যাটারির রসদ নেই দেকে দূর শালা বলেচে কি বলেনি... পস্ট শুনে রাস্তার ওপারের পাতাচাটা ভাব্লে ওকে বলেচে আর খিস্তি করতে বসলে।
এদিকের পাড়ার শেষটুকু অঞ্চলে যেটুকু ভদ্দবাবুদের মনে রবি ঠাকুরের জন্মদিন মনে রাকার কথা --- বুরজোয়া, বেওসায়ি, ইংরাজ তবিলদার, সখি বানানো বাত্তেলাবাজ, রোবিন্দোরবাবু থেকে ড়ৌবিন্দ্রনাঠ ট্যগ্যৌর ভুলে কলকেতে সহরের পবিত্র কর্ম্ম নিমকি জিলিপি যোগে গান-কবিতার শেষ মঞ্চ (গত ৪-৫ বচ্চরে একই কতা) গতকাল দুপুর থেকে বানানোর চেস্টায় রত, যাতে কোন ক্রিয়ে কর্ম ফাক্ না যায় চিৎকারে পাড়ার সব কুকুরদের জড়ো করে ফেলেচে।
এ দিকে আমাদের এই আমুদে বাবুদের আরেক তরফের, যারা রবিঠাকুর কিসের ঠাকুর, বা কি এমন লোক, বা জ্বালালে এট্টু ঘুমাতে দিলে না, বা যত্তসব ধ্যাস্টেমো, বা ওই সুরু হল, বা ওসোব অভি চলে না, বা ওই এক দেড়েল বুড়ো ভেবে রেগে ঘুম থেকে উটে ঝিমমাথায় যে যার পাইখানার দিকে যাচ্চে।
আরেক দল, বাবুদের কাজের মাসিরা সক্কালবেলায় রেল লেট করে মঞ্চে হোচঁট খেয়ে ওই মিনসে বুড়ো আবার এসে গ্যাচে কোরে গজগজ কত্তে (২) কাগোজওলার সাইকেলের পিচোনে (২) যেতে লাগ্ লো। মঞ্চে ঠাকুরকে তুলে আমাদের বাবু দুই বার বল বল বল সবে গেয়ে উটতেই, রগুড়ে তারকাটা আর পাতাচাটা একসাতে হাততালি আর দুয়ো দিল। ধুপকাঠি আর বেলফুলের গন্ধ ততক্ষণে সহরের সব এলাকায় বোদয় হুজুকে মেজাজ এনে দিয়েছে। দুটো চারটে ডেঁপো বাচ্চা মা'দের আঁচল টেনে মাটের দিকে দেকাচ্চে -- ওকেনে দজ্জাল বিবি বাবুকে ধমকাচ্চে। বাবু ভয়ে পেয়ে হোঁচট খেয়েচেন।
এদিকে মঞ্চের উপর ঠাকুরও কান্নিক মেরে গ্যাচে আর বাঁশের গাঁট ঠিক ওনার মুকের ওপর এমন ভাব মেরে পড়েছে, কাচের মাঝে নম্বা চিড় ধরিয়ে দিল, গ্যালো, গ্যালো করে ভট্চাজ্জি চুড়িদারের নাড়ায় মঞ্চের বাশ আটকে সটান পড়লে।!
রবিঠাকুরের জন্মদিন কলকেতেয় হবে আর দালাল থাকবে না ভেবে মনে গন্ডগোল না বাধে, সেইজন্ন বাবুদের কারবারে এই সক্কালবেলায় উপস্থিত হয়েচেন। মাইক, সাউন্ড, লাইট, রাংতা, তবলা, হারমনি, ঘোষক, মেয়েদের সারি, বিবিদের গোরের মালা, বাবুদের মাল, নাচের তাল নিয়ে এয়েচেন। প্রভাত ফেরি শুরু করিয়ে দিয়ে বসবেন। সৎকর্ম্মে বাঙ্গালিদের চোক্ ফুটে উঠবে আজ।
লম্বাজকি আজ ক্যাঁতাফোঁড় পাঞ্জাবি পাজামা পরিহত, একুনো আজ সারাদিন রেডিয়োতে রবিঠাকুরের গান গুজে দিতে হবে, বিজ্ঞাপনের মাঝে, চিল্লিয়ে শোনাতে হবে রবিঠাকুরের জ্ঞান, বিজ্ঞাপনের মাঝে, ফাজিল জকিকে বুজিয়ে দিচ্চে, কোনও গন্দি বাত বলা চলবে না বলে শাসিয়েও দিলে। চ্যানেলে (২) রবিঠাকুরের গান বাজতে শুরু করলেই জকিরা ঝিম মেরে ফেসবুকে নিজেদের ছবি বদল করতে ব্যাস্ত হল। ন'পাড়ায় বৈশাখি সক্কালবেলায় শরত তোমার অরুণ আলো লাগিয়ে আমোদের সহর, ছ'পাড়ায় আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার বাজিয়ে প্রমোদের সহর বাৎসরিক উল্কাপাতের সুত্রপাত হল।
যে দল বাবুদের আজ আপিস, কানে গান গুজে বারে বারে চ্যানেল বদলে ব্যাস্ত হয়ে কোতাও গান শুনতে না পেয়ে চটে গেলে, ঝকড়া কত্তে কত্তে ক্লান্ত হল। যে দল বাবুদের ওলা, উবারে, বন্দ কর, বন্দ কর বলে মোবাইল টিপতে লাগলে, যে বাবুদের আমারে না জান করি প্রচার না কল্লে বিক্কিরি হবে না...
যে দল বাবুদের আজ আপিস, কানে গান গুজে বারে বারে চ্যানেল বদলে ব্যাস্ত হয়ে কোতাও গান শুনতে না পেয়ে চটে গেলে, ঝকড়া কত্তে কত্তে ক্লান্ত হল। যে দল বাবুদের ওলা, উবারে, বন্দ কর, বন্দ কর বলে মোবাইল টিপতে লাগলে, যে বাবুদের আমারে না জান করি প্রচার না কল্লে বিক্কিরি হবে না...
Comments
Post a Comment