বটতলার ব্রতকথা
হাঁটুমুড়ে পান কর বসে একবার
ছেঁড়া ছাইপাঁশ প’রে তাল ঠোক দেখি
কোথাকার জল গড়ায় বিষন্ন শীৎকার
আকুল কবিকুল চোরাবালির গভীরে নাকি!
তবু মিষ্টভাষ্যের গোপন খোঁজ রেখে যায়
বাকি সুর আলগাচুর ছন্দমন্থরকথা
সোহাগী ব্যর্থ ভিড় আজও চর্যাপদ গায়
আদর, পদ্যের নেই আন্তরিক মাথাব্যাথা।
যত অরিকথা হেঁটমাথা কূটে মরে যাক
নেকবিবি-কেচ্ছা লিখে যাবে খঞ্জনাপাখি
ডানা ঝাপটাতে থাক বেহায়া দাঁড়কাক
জলের তখন নীচে রাজকন্যার ডাকাডাকি
ফিরে আয় মেঘ, তুলো, বইপোকা! ধুলো
ঝেড়ে টুপ করে না হয় দিবি অতলে ডুব
উপজিয়া কবি বুকে চুপ তোর ঘ্রাণে
যৌবন পাবি! ঠোঁট ছুঁই, মাইরি একদম চুপ।
হাত রাখ আমার গভীরে, শরীরে, এইখানে
সেইখানেই খুঁজে দেখ বিদ্যাসুন্দর প্রেম
হেমলতা, রতিকান্ত, সারারাত কতবার!
ভাললাগা দাশুরায় এ যে নিকশিত হেম।
বলেছিলাম কানে কানে পদাবলী বারেবার
হাজার বসন্তে সেই যত অভাগীর মেয়ে
হরিদাস গুপ্তকথা আজও পাবি সেথায়
হালকা চাঁদ চোখ ছুঁয়ে যায়। পরম নরম নে।
আজকাল হারালো পুরাণ, ভাষাপ্রেম নেই
বহুকাল একাচারী! পুঁথিকামে মজেনা
অবাধ্যভাষিণী সেই বটতলা গেল কই!
শোভাবাজারের ছাপাখানা আর চলেনা।
যাইহোক, থাক সে সব পুরাতনী কথা
আমিই সেই রাঢ়, তোর কামাতুর মেয়ে
ঘুমভোরে ওঠ, বুকে রাখ তোর মাথা
হাজার বসন্ত ডাকে, জড়িয়ে নে।
নতুন বটতলা বসে বইপাড়া ঘেঁষে
কুলটা গুপ্তকথা পেল ভব-রূপান্তর
সারাদিন সারারাত পয়ার-ছন্দ পড়
তোর ওষ্ঠ ছুঁয়ে যাবো মিষ্টি তেপান্তর।
Comments
Post a Comment