ট্রেনগুলো
ট্রেন ১
ঠিক সন্ধের আগের গোধূলিতে দেখা যেত
আয়না একটু দূরে দাঁড়িয়ে চোখে মুখে রোদ নিত
মেখে। টুপি সাইকেল নিয়ে ঠিক সময় মেনে এসে রোদ গলে
জল হবে এখন। গেঁদে বাড়িতে বাড়িতে পৌছাতে গেলেই
ওপারের রেলগেটে, পাশের মাঠে সন্ধে পড়ত ঢলে
রাত্রি বসত গুছিয়ে।
আয়নায় মুখ ডুবিয়ে,
ভারী চুলে হাত চুবিয়ে
পড়াশুনার কথাও হত রোজ
খুনসুটি, এটা ওটার খোঁজ
‘লুকিয়ে আস আধার রাতে’,
অহেতুক কিছু ঝগড়াও থাকত শেষ পাতে
আর এখন! শান্তি, সীমান্ত, কৃষ্ণনগর ভাবে
এই লাইনের দুপারে আজকাল কিসের ছাতা হয়!
এখন আয়নাদের ফোনে ফোনেই নাকি মনের কথা বয়!
সন্ধের আগে সন্ধের পর।
ট্রেন ২
একলা শান্ত স্টেশন, তোমার বন্ধুরা ত বেশ ভাল
রোজ আসে এ তার কাছে বসে – শ্যামলী আর কালো
দুটি পরম আত্মীয়া! একটু দূরের ; তখন দিগন্তময়
সূর্যের আলোটুকু নিবিড় কনে দেখতে দেয়।
কোন ট্রেন এল গেল, কোন ট্রেনের কী ভীষণ তাড়া
আর সবটুকু হারাতে হারাতে জানলায় বসে থাকে যারা
দু একজন নামে ওঠে, দু একজন দাঁড়ায় কিছু খোঁজে
এক স্টেশন গল্প বসায় কেউ কেউ হাওয়ার মাঝে ।
ওরা ত দিব্বি মসগুল – একটু আধটু ঝগড়াও হয়
তারপর– আরও দুটি বন্ধু এসে পড়ে ভরা সন্ধ্যায়
চাপাগাছের কোলে চুপচাপ হেলে সাইকেল থাকে
ওদের রামধনু সম্ভাব আঁকে রেলিঙে রোয়াকে।
ট্রেন ৩
স্টেশন দাঁড়িয়ে কাঠ। বাকি ফুল আহ্লাদী পাশের জমিতে
কে কার দেখা পাবে, আর কেউ কেউ ভুল করে মাটিতে
মুখ গুঁজে বসে আছে আজ। ভাইট, আকন্দ, মালতি
সব্বাই সারাদিন চপলমতি – ওপাশের খালে প্রতি
বর্ষায় ভরা জলে কচুরিপানা সামনে পিছনে যায়
গর্ভবতী গরু মা হব মা হব – আনন্দ আর্তি জানায়
স্টেশনের কোন কাজ নেই – দুই একটা মালগাড়ি লোকালের পর
একা বসে গান ধরে টিপকলে ঠেস মেরে চাতালের ওপর
ট্রেন ৪
পারবে কি এনে দিতে কিছু রোদ জানলার ভিতর!
Comments
Post a Comment