পরকীয়া নয়

প্রতি,
সম্পাদক,
...
কলকাতা

মাননীয় মহাশয়,

বিষয়ঃ ২৮/০৯/১৮ আইন থাকুক না থাকুক ...

উক্ত রচনায় পরকীয়ার গুণাগুণ সম্পর্কে নয়, বরং এই প্রসঙ্গে যে ভ্রান্তিটির উপরে আলোকপাত করতে চাই তা রচনার সাথে ব্যবহৃত ছবিটি, অর্থাৎ তথাকথিত ছায়াছবির উক্ত দৃশ্যটির উপস্থিতি। ‘চারুলতা’ পরিচালকের নিজস্ব ভাবনার প্রকাশ। সেইখানে রবীন্দ্রনাথের চারুবালার মিলমাত্র নেই। ‘কেন নেই’-এর উত্তর পরিচালকের স্বাধীনতায় ন্যস্ত থাকুক। বরং পরকীয়া প্রসঙ্গে প্রায়শই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নষ্টনীড়’ আশ্রিত ছায়াছবিটি আসে তাই একবার তার মূলে যেতে বাধ্য হচ্ছি।


দেওর-ভাজের যে সম্পর্ক 'পাপ'রহিত, 'দেহ'রহিত, যে সম্পর্ক চারুবালার অন্তরে, " ছি! অমলের মন কি এমন হইবে। এমন ক্ষুদ্র? এমন কলুষিত? বিবাহিত রমণীর প্রতি তাহার মন যাইবে? অসম্ভব - " ভাবনার উন্মেষ ঘটায়, তা যে পরকীয়া নয় তা জানার প্রয়োজন উক্ত ছায়াছবি-পরবর্তী কালে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। তৎকালীন সুধীজনকৃত অপ্রয়োজনীয় উল্লাসে চাপা পড়ে গল্পটির নির্মল সত্য। দেওর-ভাজের সখ্যভাব যে যে কারণে পরকীয়া নয়, গল্পের পরতে পরতে তা ছড়িয়ে আছে।


নষ্টনীড় গল্পে অনুপস্থিত পরকীয়াকে 'তৈরি করা/ বানানো' এবং একটি না-সত্য ক্ষেত্র নির্মান করাও হয়ত শিল্প, যা আরেক রসের জন্ম দেয়। এত শক্তিশালী সেই রস যে, তার রেশ অর্ধশতাব্দ অতিক্রান্তেও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতায় আলোচ্য রচনার সাথের ছবিটি রেখে যায়। তবে এও কিন্তু পুরানো-অবুঝ 'উত্তর-সত্যকে' প্রশ্রয় দেওয়া।

প্রয়োজনে রবীন্দ্রনাথ পরকীয়া ভাবের উত্থাপন করেছেন। তবে এই গল্পে নয়। আর একবার না হয় নষ্টনীড়ে প্রবেশ করে দেখা যেতেই পারে চারু, অমল, ভূপতি আদৌ কোন ত্রিকোণ নাকি তিন-চারটি (মন্দাও ) অনির্দিষ্ট সমান্তরাল…। নয় কি?


নমষ্কারান্তে,

Comments